দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীদের ঢাকায় জড়ো না করে স্নাতক সম্মান শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় পর্যায়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষাবিদরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করলেও প্রশ্নফাঁস ঠেকানোসহ নানা ধরনের প্রতারণা রোধে সব প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় কিছুটা পরিবর্তনও এনেছে কর্তৃপক্ষ। প্রতি বছর পাঁচটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলেও এবার তা হবে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় প্রশাসনে।
এ প্রসঙ্গে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের মধ্যে বিভাগভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা নেয়া ভালো সিদ্ধান্ত। তবে মূল উদ্বেগ প্রশ্নপত্র ফাঁস এড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিশ্চিত করা।’
এদিকে প্রশ্নফাঁসসহ সব ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা সারাদেশে বিভাগগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয় বা নামি কলেজগুলোয় পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করব। আমাদের ডিনরা পরীক্ষার তদারকি করবেন। সুষ্ঠু ও প্রতারণা মুক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নেব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানও জানালেন একই কথা, ‘আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে যে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনরা বিভাগভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করেছে। উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) ফল প্রকাশের পরে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনের পরে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
প্রতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেতে ভর্তি যুদ্ধে নামতে হয় শিক্ষার্থীদের। কারণ শিক্ষার্থী অনুপাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা খুবই কম। মোট ৪৬ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া ৩৯ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চলতি বছরে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ছাড়াই অটোপ্রমোশন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এতে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ শিক্ষার্থী সরাসরি পাস করতে যাচ্ছেন। ফলে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দ্বিধাদন্দ দেখা দিয়েছে।
ডিজিএ/এমডিজেএম